[:bn]শশঙ্গাসন ও শয়ন অর্ধপদ কটি উত্থান আসন:
যোগের তিনটি ভাগ। একটি Spiritual অর্থাৎ আধ্যাত্মিক দিক। দ্বিতীয়টি চিকিৎসাশাস্ত্রের সঙ্গে যুক্ত, শরীর ঠিক রাখার উপায়। আর তৃতীয় ভাগটি খেলাধুলার অঙ্গ। একটু ভেঙে বললে বুঝতে পারবে। আজকের দিনে শুধু পশ্চিমবাংলায় নয় ভারতবর্ষের নানান রাজ্যে অনুষ্ঠিত হচ্ছে যোগাসনের প্রতিযোগিতা। এই প্রতিযোগিতা করার মূল উদ্দেশ্য শরীরকে সুস্থ-সবল রাখা, অতিরিক্ত উত্তেজনার সময় মনে শান্তি রাখা। তার সঙ্গে মানসিক চাপকে দূরে রাখতে শেখা। আর সর্বোপরি যোগাসনের প্রচার ও প্রসার। আধ্যাত্মিক দিক বলতে শুধুমাত্র হিন্দুশাস্ত্রের কথাই বলছি না, সব ধর্মের ভিতরে যোগের নানান ক্রিয়াকলাপ এবং আসনের নানান ভঙ্গিমা লুকিয়ে রয়েছে। মুসলিম ধর্মে যখন নামাজ পড়া হয় দেখা গিয়েছে যোগের নানান ভঙ্গিমা রয়েছে।
এই সংখ্যায় দুটি আসন নিয়ে লিখছি। প্রথম আসনটি শশঙ্গাসন। শশঙ্গাসনের আগে ভুজঙ্গাসন, শলভাসন, ধনুরাসন, মৎস্যাসন, উষ্ট্রাসন ইত্যাদি শিরদাঁড়া পিছনে বেঁকিয়ে আসন করে নিলে ফল আরও ভালো পাওয়া যায়। এই আসনটি লম্বা হতে সাহায্য করে বিশেষ করে ১২-১৩ বছর বয়স থেকে নিয়মিত অভ্যাস করলে অনেকে ভালো ফল পেয়েছে। যদিও লম্বা হওয়ার জন্য কিছু গ্রন্থির রসও (Gland secreation) দায়ী।
প্রথমে ব্জ্রাসনে অর্থাৎ নিল ডাউন হয়ে পায়ের পাতা উল্টে দিয়ে বসো। এখন শ্বাস নিয়ে শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে মেয়েটির মতো দু’পায়ের গোড়ালি ধরে মাথার ব্রহ্মতালু মাটিতে পেতে দাও এমনভাবে যেন কপাল দু’হাঁটুর মাঝখানে থাকে এবং যতটা পারো নিতম্ব মেয়েটির মতো তুলে নিয়ে এসো। এমনভাবে তোলবার চেষ্টা করো যেন হাত দুটি টানটান হয়ে যায়। এই অবস্থানে ১৫/২০ বার লম্বা লম্বা শ্বাস নেওয়া- ছাড়া করো। পরে মাথা উপরে না তুলে ধীরে ধীরে মাথা ও পা ছড়িয়ে দিয়ে উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ো অর্থাৎ শবাসনে বিশ্রাম নাও। আধ মিনিট বিশ্রাম নিয়ে একই ভাবে আসনটি ২/৩ ক্ষেপ করো। স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে, মানসিক চাপ দূর করে , তবে যাদের উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে বা কোমর ও ঘাড়ে ব্যথা রয়েছে তারা এই আসনটি এখন করতে যাবে না।
আর একটি আসন হল শয়ন অর্ধপদ কটি উত্থান আসন। শশঙ্গ আসনের পর এই আসনটি করলে উপকার অনেক ভালো হয়। কোমরের বাতজনিত ব্যথা ভালো হতে সাহায্য করে। যাদের শ্বাসকষ্ট রয়েছে বিশেষ ব্রঙ্ককিয়াল অ্যাসমা রয়েছে তারা অবশ্যই আসন তালিকায় এই আসনটি রাখবে। এটি অতিরিক্ত শ্লেষ্মা বের করে দিতে সাহায্য করে। চিকিৎসাশাস্ত্রে বলা হয় পশ্চারাল ড্রেনএজ। চিৎ হয়ে শুয়ে পড়ে হাঁটু থেকে পা ভাঁজ করে দাও। এবার ছবির ভঙ্গিমায় কোমর ধীরে ধীরে উঁচুতে তুলে দাও। এই অবস্থানে থেকে ১০/১৫ বার শ্বাস নেওয়া-ছাড়া বা সাধ্যমতো সময়কাল থাকতে হবে। এই ভাবে ২/৩ ক্ষেপ করবে।