আজকাল আর নিয়ম করে বাজার যাওয়া হয় না, হয় না বাড়ির খুঁটিনাটি দেখভালও। বাড়ি? বাড়িটাই তো আর নেই। অথচ কত যত্নে, কত পরিশ্রমে এই মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকু বানিয়েছিলেন সমরেন্দ্রবাবু। গিন্নির পরামর্শে ও সাহচর্যে সে ছিল এক ভালোবাসার নন্দনকানন। দুই ছেলে যখন বাড়িময় হেসে খেলে বেড়াতে, বুক ভরে যেত তাঁর। প্রাণভরে উপভোগ করতেন বড় আদরের দুই সন্তানের খুনসুটি। বাড়ির সামনে একফালি জায়গাটুকুতে আর ইট-কাঠের ছোঁওয়া দেননি। ফাঁকাই রেখেছিলেন গিন্নির আবদারে। পরম মমতায় ছোট্ট বাগান তৈরি করেছিলেন তাঁরা। কর্মব্যস্ত দিনের শেষে এই আশ্রয়টুকুর লোভে মন পড়ে থাকত। ভাল-লাগার এই বাড়ির নাম দিয়েছিলেন 'অবকাশ'।
সময় বদলেছে, বদলেছে দিনকালও। কখন যে ছেলেরা স্কুল-কলেজের গন্ডি পেরিয়ে যে যার কর্মক্ষেত্রে ব্যস্ত হয়ে পড়ল টেরই পেলেন না সমরেন্দ্রবাবু। কর্মসূত্রে আত্মজেরা আজ বাইরে। সেই অল্প বয়েসের দিনও আর নেই। আগে যে কাজ নির্দ্বিধায় দশ মিনিটে সেরে ফেলতেন, এখন সেই কাজেই সময় লাগে পাক্কা এক ঘন্টা। বছরভর সর্দি-কাশি, প্রেশার-সুগার, হজমের সমস্যা নিয়ে বরং জমজমাট দিনাতিপাত।
সৌজন্যেঃ তনুশ্রী কাঞ্জিলাল মাশ্চরক
নবকল্লল,সপ্তম সংখ্যা, ৫৮ বছর, কার্তিক ১৪২৪