Menu

Min. Order value - INR 300 Delivery Charges Within Kolkata - Free In WB (outside Kol)- INR 75 EZ( Ori, Bih, Jhar) - INR 100 Others In India - INR 150 Outside India - on actuals

[:bn]ভোম্বল দার লেক নিয়স অভিযান[:]

April 3, 2018
[:bn]সকালবেলা ঘুম থেকে উঠেই খবরের কাগজটা হাতে নিয়ে পুঁটে অবাক হয়ে গেল। দেখল এক ভয়ংকর খবর ছাপা হয়েছে খবরের কাগজে। প্রথম পাতার হেডলাইনে লেখা হয়েছে যে গত তিনদিন আগে রাত্রে অর্থাৎ ১৯৮৬ সালের ২১ আগস্ট ক্যামেরুনের লেক নিয়স ও তার পাশের গ্রাম থেকে প্রায় সতেরোশ মানুষ এবং গ্রামের সব পশুপাখি কে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে। কিভাবে তাদের মৃত্যু হলো তাও রহস্যাবৃত। একটু পরেই ভোম্বলদার ফোন এল, পুঁটে, আজকের খবরের কাগজটা পড়েছিস ?  হেডলাইনটা দেখ , কি সাংঘাতিক ঘটনা ঘটে গেছে। পুঁটে জিজ্ঞাসা করল, কি হতে পারে বলো তো ? সেটা দেখতেই তো যেতে হবে। এখানে বসে তো আর বোঝা যাবে না। তাছাড়া আজ সকালেই ওই দেশের স্বরাষ্ট্র দপ্তর থেকে একটা ফোন পেয়েছি। বিশ্বের সব গোয়েন্দাদের থেকে সাহায্য চেয়েছে এই রহস্যের কিনারা করার জন্য। আমি সম্মতি দিয়ে দিয়েছি। তুই হুলো ও স্বরাজবাবুকে বলে দে তৈরি হয়ে নিতে। আজ রাতের ফ্লাইটেই  যাব। একঘন্টা বাদে আমার অফিসে চলে আয় বিস্তারিত আলোচনা করা যাবে। বলেই  ফোনটা রেখে দিল। পুঁটেও সেইমতো হুলো এবং স্বরাজ বাবুকে বলে দিয়েছে এক ঘন্টা পরে বি বি সি(ভোম্বল ভূষণ চক্রবর্তী)-র অফিসে দেখা করতে। সঙ্গে এও বলে দিয়েছে আজ রাতেই রওনা হতে হবে। সবাই এক ঘন্টা পরে গিয়ে জড়ো হল। কি কি নিতে হবে এবং কি কি করতে হবে সব ঠিক করা হল। ইতিমধ্যে ভোম্বলদা ক্যামেরুনের হাই কমিশনের অফিসে কথা বলে প্লেনেট টিকিটের ব্যবস্থা করে নিয়েছেন। এরপর নির্ধারিত সময়ে যাত্রা শুরু হলো লেক নিয়সের উদ্দেশ্যে। প্লেনে বসে বসেই সংক্ষেপে ওই লেকটির সম্পর্কে সব বোঝালেন ভোম্বলদা। বললেন, স্থানীয় লোকেরা এই লেকটিকে বলে ভূতেদের লেক(হ্রদ) বা ভুতুড়ে লেক। এই লেক নিয়ে অসংখ্য কাহিনী ছড়িয়ে আছে। এই লেকটি দেখতে এত সুন্দর যে একে ভুতুড়ে বা বিদঘুটে বলতে মন চায় না। গাছপালায় ঢাকা এক পাহাড়ের একেবারে চূড়ায় রয়েছে টলটলে জলে ভরা এই হ্রদ। যেসব বিদেশী এই হ্রদ দেখেছেন তারা বলেন, এর জল নাকি কাচের থেকেও স্বচ্ছ। তবুও এই লেক নিয়ে এলাকার বাসিন্দাদের ভয়ের শেষ নেই। তাদের ধারণা আশেপাশের যত লোক মারা যায় তাদের সব প্রেতাত্মা এই বিদঘুটে হ্রদে বাস করে। তারা বলে, ঠিক দুপুর বেলা যখন চারিদিক নিস্তব্ধ থাকে তখন গেলে নাকি লেকটিকে   দেখা যায় না।লেকের জায়গায় একটা কুঁড়েঘর দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। তখন নাকি এলাকার প্রেতাত্মারা বিশ্রাম নেয় সেখানে। কিন্তু যদি একটু শব্দ করা হয়, তবে সে কুঁড়েঘর  নিমেষে অদৃশ্য  হয়ে যায় এবং তার জায়গায় লেকটা আবার ফিরে আসে। স্থানীয় লোকদের এও বিশ্বাস যদি কেউ লেকের পাশ দিয়ে একা একা হেঁটে যায়, তবে অনেক সময় লেকের মাছ জল থেকে লাফিয়ে ডাঙায় উঠে যায়। তখন বুঝে নিতে হবে লোকটির কোনো ঘনিষ্ঠ আত্মিয়ের প্রেতাত্মা সেই মাছটা উপহার দিয়েছে,সেই লোকটিকে। তাদের মতে সব প্রেতাত্মা মানুষের ক্ষতি করে না। আত্মীয়দের প্রেতাত্মারা তাদের ভালই চায়। কিন্তু এ ব্যাপারে সকলে অবশ্য একমত ছিলনা। হোক আত্মীয়-স্বজনের প্রেতাত্মা তবুও প্রেতাত্মা তো বটে। তাই ভয়  কাটেনা লোকজনদের। কেউ একা একা ঐ লেকের ধারে-কাছে যেতে সাহস পায় না।বিশেষ করে সন্ধ্যের পরে তো নয়ই। এমনকি দুপুর বেলায়ও একা একা কেউ সেখানে যায় না। ঐ লেকের জলও নাকি রহস্যময়। একটু হাওয়া দিলেই লেকের জল এমন ভাবে ফুঁসে উঠতে থাকে যা না দেখলে নাকি বিশ্বাস করা যায় না। সবথেকে অদ্ভুত হল হ্রদের আশেপাশে মাছ বৃষ্টি হয়। অর্থাৎ আকাশ থেকে বৃষ্টির মতো মাছ পড়ার ঘটনা নাকি হামেসাই হয়। স্থানীয় লোকজনেরা লেকের অশরীরী বাসিন্দাদের শান্ত করতে ওঝা-বদ্যি ডেকে, মুরগি,ছাগল কেটে উৎসর্গ করে লেকের জলে। পুঁটে বলল, তুমি এই লেক সম্বন্ধে এত কিছু জানলে কি করে? ভোম্বলদা উত্তর দিলেন, আমি আগে খবরের কাগজে ও বই-এও পড়েছি। স্বরাজবাবু বললেন,আমিও কিন্তু আগে এই লেকের সম্পর্কে পড়েছি। কিছু সংখ্যক লোকের মতে বহুকাল আগে এক রাজা বাস করতেন এই এলাকায়। অনেক মন্ত্র তন্ত্র জানতেন। জাদুর অসীম ক্ষমতা ছিল তাঁর। একবার যখন তার মন্ত্রী সেনাপতিরা ষড়যন্ত্র করে তাকে মারার চেষ্টা করেছিল, তখন রাজা সেই ষড়যন্ত্রের খবর টের পেয়ে এক পাহাড়ের ওপর লুকিয়ে থাকেন। কিন্তু ষড়যন্ত্রকারীরা সেই খবর  আগেই টের পেয়ে যায়। অবশেষে সৈন্যসামন্ত নিয়ে তারা রাজাকে ঘিরে ফেলে। রাজা সুযোগ বুঝে একটা গাছের ডালে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেন। শত্রুসৈন্যরা কাছে এসে সেই দড়ি কেটে দিতেই রাজার মৃতদেহ মাটিতে পড়ে প্রচণ্ড বিস্ফোরণ ঘটায়। চারিদিক থরথর করে কেঁপে ওঠে। এবং তখনই সৃষ্টি হয় এই লেক নিয়স।শত শত সৈন্যসামন্ত সমেত মারা যায় ষড়যন্ত্রকারীরা। লোকের বিশ্বাস সেই জাদুঘর রাজা আর তাঁর শত্রুর আত্মারা আজও বাস করে এই হ্রদে। আফ্রিকা মহাদেশের ক্যামেরুন নামে যে দেশ আছে সেই দেশের উত্তর-পশ্চিমে নাইজেরিয়া সীমান্তে এই নিয়স হ্রদ( Lake Nyos)। এই লোকটির দৈর্ঘ্য  প্রায় ২০কি. মি , প্রস্ত প্রায় ১.২ কি .মি  এবং গভীরতা ৬৮০ ফুট। ভোম্বলদা উত্তর দিলেন,ঠিক বলেছেন স্বরাজবাবু।  আপনিও বেশ বই পত্তর পড়েন বোঝা যায়। এই লেকের সম্পর্কে আগে কেউই তেমন খোঁজখবর রাখত না। কিন্তু গতকালের এই ঘটনায় সারা বিশ্বের মানুষ চমকে উঠেছেন। ২১ আগস্ট বিশ্বের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। সেখানে পৌঁছেই সকলে চলে গেলেন লেক নিয়স ও পাশের গ্রামে। অবস্থা সরেজমিনে তদন্ত করতে। ক্যামেরুনে প্রায় সারাবছর ধরেই বৃষ্টি হয়। তবে জুলাই-আগস্ট মাসে খুব বেশি। সেদিনও ঝোড়ো হওয়ার সঙ্গে অঝোরে বৃষ্টি নেমেছিল এই এলাকায়। বৃষ্টির সময় ঘরের বাইরে বেরোনো খুবই কঠিন হয়ে পড়ে। খবর নিয়ে জানা গেল গ্রামের বাসিন্দা মেষপালক হাদারির পরিবার একমাত্র বেঁচে গেছে বিপদের হাত থেকে। ভোম্বলদা বললেন, দেরি করা ঠিক হবে না। এই রহস্যের কিনারা করতে হলে আগে হাদারির কাছে পৌছতে হবে। অনেক খুঁজে হাদারিকে পাওয়া গেল। চারিদিকে বহু ফটোগ্রাফার ঘিরে রয়েছে। ভোম্বলদা  বললেন, দ্যাখ ,এভাবে হাদারিকে ধরা যাবেনা। বরং একজন স্থানীয় দোভাষীকে ভাড়া করা যাক। দেখা গেল একটি অল্প বয়সী যুবক হাদারির পাশাপাশি ঘুরছিল। ভোম্বলদা ইশারা করে তাকে ডাকলেন। যুবকটি এগিয়ে এলে ইংরেজিতে জিজ্ঞাসা করলেন, ডু ইউ নো ইংলিশ ? ছেলেটি উত্তর দিল,ইয়েস। ব্যস আর যায় কোথায়। ছেলেটিকে পাশে ডেকে নিয়ে গিয়ে কানে কানে কি যেন কি বললেন। ছেলেটিও রাজি হয়ে গেল। বোঝা গেল অর্থকড়ির কথা বলেছেন। ছেলেটি হঠাৎ সবাইকে সরিয়ে দিয়ে ভোম্বলদাকে হাত ধরে টেনে নিয়ে এলো হাদারির কাছে। হাদারি একটা গাছের তলায় বসে ছিল। চোখ দুটো তার কোটরে ঢুকে গিয়েছিল।দেখে মনে হচ্ছিল সে যেন তার মৃত্যুকে সামনে থেকে দেখেছি। আর রিপোর্টারদের প্রশ্নবানে জর্জরিত হয়ে পড়েছিল। হাদারি ছেলেটির কথায় সেদিনের কথা বলে যেতে লাগল আর ছেলেটি ইংরেজিতে ভোম্বলদা ও অন্যান্যদেরট্রান্সলেট করে শোনাতে লাগল। হাদারি বলছিল---- যেদিন এই ঘটনাটা হয় সেদিন ছিল বৃহস্পতিবার। হাট বসার দিন। হাটে না গেলে সারা সপ্তাহের খাবার জিনিস আনা যাবে না। আর অন্য কোথাও পাওয়া যাবে না। লেক নিয়স  থেকে মাইলখানেক দূরে পাহাড়ের ছোট্ট একটি গ্রাম, নাম, ঢালু নিয়স। এই গ্রামের লোকেরা সবাই খুব গরিব। গরু, ভেড়া, ছাগল, এসব পালন করেই বেশিরভাগ লোকের দিন চলে। গ্রামের জেলে ও  চাষীও কিছু আছে। হাট থেকে লোকজন ঘরে ফেরার পর সব গুছিয়ে খাওয়া-দাওয়া শেষ করতে একটু রাতই  হয়ে গিয়েছিল সেদিন। খাওয়া-দাওয়া শেষ করে কেউ কেউ শুয়েও পড়েছিল। আবার কারো কারো তখনও খাওয়া শেষ হয়নি। হঠাৎ একটা বিকট বিদঘুটে আওয়াজে  ঘুম ভেঙ্গে গেল গ্রামের বাসিন্দা মেষপালক হাদারির। তাড়াতাড়ি ঘর থেকে বেরিয়ে চারিদিকে তাকিয়ে দেখতে লাগল। ঝড় বৃষ্টির এই ঘুটঘুটে অন্ধকারে লেক নিয়স থেকে নীল রঙের  আলো ঠিকরে বের হতে দেখে অবাক হয়ে গেল সে। ঘুম ঘুম চোখটা রগড়ে নিয়ে ব্যাপারটা ভাল করে দেখার জন্য সে দু এক পা সামনে এগিয়ে এলো।যা দেখল, তাতে সে খানিকটা হতবাক হয়ে গেল। যা দেখেছে তা সত্যি কিনা বিশ্বাস করতে পারছে না। এক বিশাল অজগরের মত কি যেন একটা নিয়স লেক থেকে এগিয়ে আসছে তাদের গ্রামের দিকে। ভয়ে, আতংকে হাত পা হিম হতে লাগলো। ঘরের সবাইকে জাগিয়ে তুলে এক ছুটে উঠে গেল পাশের একটা উঁচু টিলার ওপর। সেখানে একটা ঝোপের আড়াল থেকে উকি দিয়ে দেখার চেষ্টা করতে লাগলো, কি ঘটছে ব্যাপারটা। অন্ধকারের ঠিক বোঝা গেল না। তবে সাপের মতন কিছু একটা তাদের গ্রামের দিকে এগিয়ে আসছে এই দেখতে পেল সে। সবাই ভয়ে তটস্থ হয়ে গেল। নড়াচড়া না করে সারারাত চুপ করে বসে রইল তারা। ভোর হলে হাদারি নেমে এলো টিলা থেকে। গ্রামে ফিরে যে দৃশ্য সে দেখল তার থেকে ভয়ানক আর কিছু হতে পারেনা।গ্রামের একটি লোকও আর বেঁচে নেই। তাদের কেউ মরে পড়ে আছে বিছানার ওপর, কেউ দরজার পাশে, কেউ বারান্দায়, কেউ পড়ে আছে খাবারের থালার ওপর। গ্রামের ছোট্ট শিশু থেকে বৃদ্ধ সবাই মারা গেছে। মারা গেছে গ্রামের যত গরু-বাছুর, হাঁস-মুরগি। অনেকে তাদের শেষ খাওয়াটাও শেষ করতে পারেনি। এই কথা বলতে বলতে হাদারি পাগলের মতন বুক চাপড়ে কেঁদে চলেছে আর বলছে গ্রামের ছোট ছোট ছেলে-মেয়েগুলোও আর বেঁচে নেই। এমন দৃশ্য দেখার চেয়ে আমার মরে যাওয়াই ভাল ছিল। শুধুমাত্র ঐ এক দিনেই ঢালু -নিয়স গ্রামে  বারোশ লোক মারা গিয়েছিল। শুধু এই গ্রামেই নয় , নিয়সের এই রহস্যময় অজগরটা মৃত্যু ছড়াতে ছড়াতে চলে গিয়েছিল আর বহুদূরে। আশপাশের গ্রামে আরও ৫০০ লোক সেদিন মারা যায়। এই এলাকাটা এতই দুর্গম যে এই ভয়াবহ পরিণতির খবর পৃথিবীর মানুষ জানতে পারে ঘটনার দিন তিনেক পরে। বি.বি.সি-র টিম(ভোম্বল ভূষণ চক্রবর্তী) ও সাংবাদিকরা সেখানে পৌঁছে গিয়ে দেখেন গ্রামের গাছপালা, ঘরবাড়ি, সবই ঠিক আছে শুধু ঠিক নেই একটা প্রাণীও। পোকামাকড় গুলো পর্যন্ত মারা গেছে। অথচ ভূমিকম্প হয়নি, বড় রকমের কোনো অসুখ বিসুখও হয়নি। তাহলে কি কারনে মারা গেল এতগুলো লোক। কী এমন রহস্যময় ঘটনা ঘটলো এলাকার লোকেরা নিয়সকে ভুতুড়ে লেক বলে, তা হলে তার পিছনে সত্যিই কোনো কারন আছে ? বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে বিজ্ঞানীদের ডাকা হবে ঠিক করা হল।  ভোম্বলদা বললেন, আমাদের ভারতবর্ষের লোকদের ওপর একটু বিশ্বাস রাখুন। আমাদের কয়েকদিন সময় দিন। যদি আমরা না পারি তখন আপনারা অন্যদের ডাকবেন। হুলো, ভোম্বলদা দিনরাত নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাতে লাগলেন এই লেক ও তার জল নিয়ে। তাঁরা দেখলেন এই লেক আসলে একটা মৃত আগ্নেয়গিরির জ্বালামুখ।জ্বালামুখের নিচের দিকটা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সেখানে সৃষ্টি হয়েছে অত্যন্ত গভীর এই লেক। আগ্নেয়গিরির ভেতর থেকে কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাস মিশছে হ্রদের জলে। কিন্তু হ্রদ অত্যন্ত গভীর হওয়ায় জলের চাপে সেই গ্যাস ওপরে উঠতে না পেরে হ্রদের জলে দ্রবীভূত হচ্ছে অর্থাৎ মিশে যাচ্ছে। দেখা গেছে লেকের জলে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের দ্রবণের মাত্রা শতকরা ৯৮ থেকে ৯৯ ভাগ। এই জল বোতলে নিয়ে নাড়া দিলে তা থেকে কোল্ড্রিংসের মত বুদবুদ ওঠে। কোন কারনে লেকের জল ওলটপালট হলে বা কিছু আছড়ে পড়লে  দ্রবীভূত কার্বন-ডাই-অক্সাইড বেরিয়ে আসতে শুরু করে। আর কোন স্থান থেকে একবার এ গ্যাস বের হতে শুরু করলে তার চতুর্দিকে থেকেও বিপুল পরিমান গ্যাস একসঙ্গে প্রচন্ড বেগে বেরিয়ে আসতে থাকে। ভোম্বলদা এবং হুলো পরামর্শ করে বললেন, ২১ আগস্ট তারিখে জোরালো হওয়ার কারণে অথবা বড় কোন পাথর খন্ড লেকে পড়ায় বিপুল পরিমাণ কার্বন ডাই-অক্সাইড বেরিয়ে এসেছিল এবং সঙ্গে ছিল জলীয় বাষ্প। কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাস বাতাসের থেকে ভারী হওয়ার পাহাড়ের গা বেয়ে নিচের দিকে নেমে গিয়েছিল। আমরা সকলেই জানি, কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাসে মানুষ শ্বাস নিতে পারেনা। আর একারণেই সেদিন মারা যায় প্রায় ১৭০০ নিরীহ মানুষ। এই খবর জানার পর ২০০১ সালে বিজ্ঞানীরা এই গ্যাসকে জলের তলা থেকে সাইফন প্রণালীতে বের করা শুরু করেছেন, যাতে ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে । তবে ভবিষ্যতে ভূমিকম্পের ফলে এই লেক নাইজেরিয়ায় আবার বিপদ ডেকে আনতে পারে বলে ভোম্বলদা ওই দেশের সরকারকে সাবধান করে দিলেন।ভোম্বলদার নামের সঙ্গে বি.বি.সি সংস্থার নামও চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ল। দলের সকলেই খুব খুশি। ভারতবর্ষের নাম তারা উজ্জ্বল করতে পেরেছেন। ভোম্বলদা বললেন, তোরা যা করে দেখালি সত্যি তার কোন তুলনা হয় না। চল, ফিরে যাই নিজের দেশে। এই সরকার আমাদেরও প্লেনের টিকিটের   ব্যবস্থাও করে দিয়েছে এবং সেই সঙ্গে ধন্যবাদও জানিয়েছেন। কথায় আছে না যার শেষ ভালো তার সব ভালো।

                  কালিপদ  চক্রবর্তী

[:]
Dev Sahitya Kutir
Hello, how can we help you?
WhatsApp